ভালোই তো নাটক করো, সিনেমাতে যাও না কেন!
“ভাই একটা কথা বলবো শুনবি, আমি কয়দিন যাবৎ মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছি।”
উত্তরঃ
১.ভালোই তো নাটক করতে পারিস, সিনেমাতে যাস না কেন!
২.এইগুলা কিছু না।
৩.ঢং কমায় কর।
৪.মানসিক সমস্যা পাগলের হয় তুই কি পাগল নাকি!
৫.যা তো এইসব ফালতু কথা শোনার সময় নেই।
আরো অনেক কিছুই শুনতে হয় এসব মানুষদের। সমাজের তথাকথিত শিক্ষিত মানুষগুলো তাদের এসব ব্যবহারে একটা মানুষকে কতটুকু আঘাত করতে পারে তা আমাদের চিন্তার বাইরে।
তবে কোথায় এর শেষ!
শেষ এই যে আজ আত্মহত্যার মতো এত বড় সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে এই মানুষগুলো।
এই ডিজিটাল যুগে ভার্চুয়াল জগতের মায়ায় কেউই আর একা নয়। প্রত্যেকটি মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরস্পর ইন্টারলিংকড। মনের ভাব প্রকাশ করছে, ছবি আদান প্রদান করছে, অবসর সময় কাটাচ্ছে। শুধু ভার্চুয়ালিই নয়, মনের ভাব প্রকাশের জন্য মাধ্যমের অভাব নেই।
দৈনন্দিন জীবনের সব ধরনের সমস্যা, সুখ, দুঃখ, কষ্ট, বেদনা, কেউ বা ভার্চুয়াল জগৎকে ঘিরে প্রকাশ করছে, কেউ বা আপন জনকে বলে। কিন্তু এই ব্যস্ত শহরে কিছু ঘরে না ফেরা পাখি হারিয়ে যাচ্ছে, বিলিয়ে যাচ্ছে এই ভিড়ে।
মানসিক অসুস্থতা বা সাইকাইট্রিক্যাল প্রবলেম।।।।।
আমাদের সমাজে এই পাখিগুলোর কোন জায়গা নেই। কারণ তাদের আত্মার খাবার যে তারা কোথাও খুঁজে পায় না।
বর্তমান তরুণ সমাজের এটি একটি গুরুতর এবং মারাত্মক বিষয়। মানসিক অসুস্থতায় ভোগা প্রতিটি মানুষের প্রতি আমাদের ব্যবহার কেমন হওয়া উচিৎ তা আমরা আজও বুঝে উঠতে পারিনি। যার কারণে আমাদের সমাজের এই অবনতি। ঝড়ে পরছে হাজারো রত্ম, স্বপ্ন, ভালবাসা, মন, মানুষ। মানসিক সমস্যায় ভোগা মানুষগুলোর আত্মার যে ক্ষুদা তা আমরা তাদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত টেরই পাই না।
দূর ব্যবহার, এড়িয়ে যাওয়া, পাত্তা না দেওয়া এগুলো হচ্ছে তথাকথিত সমাজের সেই মানষদের প্রতি ব্যবহার। আর এটাই তাদের প্রাপ্য। কারণ একটা মানুষ মানসিক সমস্যায় ভোগতেই পারে না। এটা হতেই পারে না। সেই মানুষটি যা করতে চাইবে না তাকে তাই করতে হবে, যা মেনে নিতে পারবে না তাই মানতে হবে। বাক স্বাধীনতা! এই শব্দটাই বা কি। তাদের ভিতর ভয়, আতংক, অবষাদ, বিষন্নতা, হতাশা, কুড়ে কুড়ে খায়। কিন্তু এগুলো কিছুই না সবই ঠিক হয়ে যাবে। হ্যাঁ,আত্মহত্যা! এটাই হয়তো সমাধান।
কিন্তু এই সমাধানের পরেও কেনই বা এই সমাধানই বেছে নেয় তারা তাও বোঝা হয়তো হয়ে উঠে না।
– ইসরাত জাহান অর্পা
যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ।