বর্তমানে করোনা ভাইরাস এর প্রকোপে পুরো বিশ্ব জর্জরিত। এই অবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়া স্বাভাবিক। প্রচুর পরিমাণে নেতিবাচক তথ্য এবং দুঃসংবাদ আমাদের মধ্যে একধরনের অনিশ্য়তা, হতাশা এবং হিনমন্যতার জন্ম দিতে পারে। লকডাউনে ঘরে বন্দী থাকার কারণে একাকিত্ব এবং বিষন্নতা অনুভব করা স্বাভাবিক। এই অবস্থায় নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হওয়াও প্রয়োজন।
মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হওয়ার উপায়:
মেডিটেশন এবং যোগব্যায়াম: মেডিটেশন বা ধ্যান হলো এমন একটি প্রকিয়া যেখানে একজন তার সমস্ত চেতনা একটি বিষয়, চিন্তা বা কাজের উপর কেন্দ্রীভূত করে। যোগচর্চায় সবচেয়ে জনপ্রিয়, বেশি ব্যবহৃত এবং সহজসাধ্য চর্চা হলো শ্বাস প্রশ্বাসের প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার একটি নির্দিষ্ট অবস্থায় বসে সমস্ত মনোযোগ শ্বাস প্রশ্বাসের উপর কেন্দ্রীভূত করা হয়। এতে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়, প্রশান্তি অনুভূত হয় এবং নেতিবাচক চিন্তাভাবনা হ্রাস পায়।
প্রশান্তি অনুভব করার আরেকটি জনপ্রিয় প্রক্রিয়া হচ্ছে যোগব্যায়াম। যোগব্যায়াম অনেকটা মেডিটেশন এর মতই। কিন্তু এতে শারীরিক কসরত ও হয় যা আমাদের শরীরে রক্ত চলাচলেও ভূমিকা রাখে। বর্তমানে ইউটিউবে প্রচুর যোগব্যায়াম চ্যানেল রয়েছে যা দেখে সহজেই ঘরেই যোগ ব্যায়াম করা যায়।
প্রতিদিন সকালে কমপক্ষে ১০-১৫ মিনিট মেডিটেশন বা যোগব্যায়াম সারাদিনটাকে প্রফুল্ল করে তোলে।
দৈনন্দিন নিয়ম মেনে চলা: বর্তমানে লকডাউন এ ঘরে বসে অনেকেরই দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক ধারাবাহিকতা ব্যাহত হচ্ছে। ঘুম, নাওয়া – খাওয়া সহ অনেক কার্যক্রমই নিয়ম মাফিক চলছে না, যা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ও প্রভাব ফেলছে। তাই পুরনো জীবনের নিয়মের মধ্যে ধীরে ধীরে ফিরে আসার চেষ্টা করতে হবে। ঠিক সময়ে ঘুম, নাওয়া- খাওয়া করার চেষ্টা করতে হবে।
সামাজিক মাধ্যম থেকে ছুটি: বর্তমানে যদিও সামাজিক আমাদের জীবনের একটি বিশাল অংশ দখল করে নিয়েছে এবং ব্যক্তিগত যোগাযোগ থেকে শুরু করে সর্বশেষ সংবাদ সংগ্রহ পর্যন্ত সব কিছুতেই আমরা সামাজিক মাধ্যম উপর নির্ভর হতে পড়েছি, তবুও সামাজিক মাধ্যমই আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। প্রচুর তথ্য ও মতামত আমাদের মনের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তাই কয়েকদিন সামাজিক মাধ্যম থেকে বিরতি আমাদের জীবনে সতেজতা নিয়ে আসতে পারে। ভারচুয়াল জগৎ থেকে বের হয়ে আত্মদর্শন এবং পরিপার্শ্বিকতা পর্যবেক্ষণ আমাদের মানসিক প্রশান্তি লাভে সাহায্য করবে।
আত্মতৃপ্তি মূলক কার্যক্রম: বিভিন্ন বিনোদন বা শখের কার্যক্রম যেমন; বয় পড়া, চলচ্চিত্র দেখা , ছবি আঁকা , দিনলিপি লেখা , অরেগেমী তৈরি ( কাগজ ভাজ এর মাধ্যমে বিভিন্ন অবয়ব তৈরি) ইত্যাদি আত্মতৃপ্তি মূলক কার্যক্রম মানসিক স্থিরতা ও মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে
Subscribe
Login
0 Comments