হয়তো কোন এক বসন্তদিনের বিকালে দেখা হয়েছিল। তুমি দাঁড়িয়েছিলে মমতাজ হলের পাশের মোড়ে,একগুচ্ছ গাধা ফুলের মালা হাতে নিয়ে।রৌদ্রজ্জ্বল বিকালে আবছা হাওয়ায় দুলছিল চুলগুলো।
রিকশার হুড উঁচু করে তাকিয়ে থাকতে দেখে তাচ্ছিল্যের সাথে হাসছিলে।
এরপর আবার ও আমাদের দেখা হল,দুজনে এক রিকশায়,পাশাপাশি বসে ফুলার রোড দিয়ে যাচ্ছিলাম, মনে করিয়ে দিলাম রিকশার হুড উঁচু করে তাকিয়ে থাকা বালকটির কথা।শত রাজ্যের হাসি এসে ভিড় করেছিল তোমার মুখে।
কথা বলতে বরাবরই আমি উৎসুক ছিলাম না,ছলে বলে কৌশলে আমার মুখ থেকে কথা বের করাটাই তোমার অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল।
বিন্তু, নিশ্চয় তোমার মনে আছে ঐ দিনটার কথা লাইব্রেরি দেখতে গিয়ে, ময়েজ মঞ্জিল এর পুকুর ঘাটে বসে সেই বৃটিশ -পাকিস্তান সময়ের দিনগুলোতে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা।
অল ইন্ডিয়া কংগ্রেসের বার্ষিক মিটিং হয়েছিল ময়েজ মঞ্জিল এ।নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু,মহাত্মা গান্ধী, নজরুল জসীমউদ্দিন সবাই এখানে এসেছিল,পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ও এসেছিল।
আজ ওই মঞ্জিল টা প্রায় পরিত্যক্ত। তাই সৌরভ খুজতে মইজউদ্দিন গ্রন্থাগারে যেতে চেয়েছিলাম।সেই যাওয়া টা আর হয়ে উঠে নি আমাদের।
রিকশায় বসে হাতে হাত রেখে জানতে চেয়েছিলে অর্ধাঙ্গিনী কেমন হলে আমি খুশি হব!তোমার বয়ফ্রেন্ডের সাথে আমার কথাগুলো কাকতালীয় ভাবে মিলে গিয়েছিল।
জামাল এর দোকানের চপ ভাল লেগেছিল।অম্বিকার পুকুর পারে বসে ফুচকা খাওয়া বা পাগলা জইস্যার বাড়ি যাওয়া সবি তো এখনো চোখের সামনে ভাষে।
আচ্ছা বিন্তু, এখনো কি তুমি কার সাথে রিকশায় উঠো?যাও কি সেই তেঁতুল তলার মিষ্টি খেতে?কেও কি তোমায় বাসায় পৌছায়ে দেয়? মিষ্টি মুখে আমার মত করে কি কেও বলে আবার কাল দেখা হবে!
টেলিটক পাহাড়ের উপরের ধনুকাকৃতির যে গাছ টা আছে, ওটার ডালে বসে পুরানো দিনের স্মৃতি মনে করে।মাসুদ রানা উদাস ভাবে তাকিয়ে আছে দক্ষিণ-পূর্ব দিকের ইট ভাটা থেকে বের হওয়া কাল ধোয়ার দিকে ।
কাল বা পরশু আবার নেমে পড়তে হবে নতুন কোন অ্যাসাইনমেন্ট এ।বিন্তুরা আসা যাওয়া করে নিয়মিত কেও বেঁধে রাখতে পারে না রানাকে। রানাও কাওকে পাশে রাখতে পারে না। অনিরাপদ জীবনে সঙ্গী না রাখাটাই নিরাপদ।যে খানে প্রতি পদে পদে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তে হয়।
-কথা