বৃষ্টির ঝিরিঝিরি শব্দ কানে আসতেই যেন তন্দ্রা নিপাত গেলো। চারিদিকে কালচে মেঘের দলগুলো ছোটাছুটি করছে। সকালটা যেন অন্য দিন থেকে একটু আলাদা,একটু রোমাঞ্চকর। কি জানি মনে প্রেম প্রেম একটা ভাব কড়া নাড়ছে,আর বলছে, আমি কি আসতে পারি?ভাবনা তে পড়েই যেতো হলো। ভাবতে শুরু করলাম,হারিয়ে গেলাম কল্পনার কল্পলোকে।
একটি কালো চোখের ইশারা বোধহয় টানছিল।সবুজ পাড় লাগানো শর্ষে ফুলের রঙের একটি শাড়ি যেনো ছুটে আসছিল।হঠাৎ বললো,”এই রক্তিম চলো”। তৎক্ষনাৎ রক্তিমার হাত ধরে হাটা শুরু করলাম। ওকে যেনো আজকে কেমন লাগছিল। কালো ভ্রুয়ের নিচের সাদা কালোর মিশ্রণে তৈরি চোখগুলো আমার হৃদয় টাকে যেনো টেনে নিচ্ছিল ওর কাছে। টোল পড়া ওই গালে চাঁদমুখ হাসি মনটাকে বিমোহিত করে দিচ্ছিল। খোলা এলোচুল কোমরপর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে আছে। একজন সম্পূর্ণ নারীর একটি অবয়ব দেখছিলাম রক্তিমার মধ্যে।
দু’জন একসাথে হাঁটার মাঝেই বর্ষার কালো মেঘ থেকে বৃষ্টির ফোঁটা পড়া শুরু হলো। রক্তিমা বৃষ্টিতে ভিজতে থাকলো। আমি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছিলাম। কি সুন্দর লাগছে ওকে। রক্তিমা বললো, “রক্তিম এসো একসাথে ভিজি।” কথা ফেলতে পারলাম না। ভিজলাম দুজনে, ভিজে একাকার হয়ে গেলাম। বৃষ্টির মাঝেই আবার হাটতে শুরু করলাম।
গোলাপ ফুল নিয়ে ওর মাথায় বসিয়ে দিতেই রক্তিমা আনন্দিত হয়ে গেল। মেঘ যেন আরো ভয়ংকর রূপ নিতে থাকলো। ব্যাপারটা ভয়ের উদ্রেক করলো বটে। কেননা মেঘের গর্জন আমার দুর্বলতার অন্যতম কারণ। রক্তিমা হাসতে থাকলো ব্যাপারটা নিয়ে।
“রক্তিম,এই রক্তিম, ঘুম থেকে ওঠো, কত সকাল হয়ে গেছে” রক্তিমার ডাকে হুঁশ ফিরে এলো। স্বপ্নের ছেদ ঘটলো। আহ্ কল্পলোক কতটাই না দারুণ। ভাবতে ভাবতে সকালের নাস্তার টেবিলে চলে গেলাম।
-শোভন আদনান
মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ
জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়