করোনাভাইরাসের প্রকোপে সারা বিশ্ব স্থবির। অদৃশ্য এই জীবানুর ভয়ে ঘরে বন্দি তামাম দুনিয়া। মৃত্যুর পর মৃত্যুতে আতংকিত জনজীবন। ভয় আর দুর্দশায় অস্থির সাধারণ মানুষ। এহেন পরিস্থিতিতেও এই করোনাভাইরাস আশির্বাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে কিছু মুসলিম লোকালয়ে।
ভাইরাসের ভয়ে শাসক, শোষক, নিপীড়ক, হত্যাকারীরা যখন ঘরে বন্দি, তখন নিজেদের জীবনে কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে এই বর্বর দুনিয়ার রোষানলে আটকে পড়া কিছু মুসলিম জনগণ।
করোনাভাইরাসের প্রকোপে সারা বিশ্ব লকডাউন হওয়ার কয়েকদিন আগেও সারাবিশ্বে মুসলিম হত্যার খবর বেশ স্বাভাবিকই ছিল। খবরের কাগজগুলোতে চোখ বোলালেই দেখা মিলত যে অমুক জায়গার এত জন মুসলিমকে হত্যা, ভারতে মুসলিম হত্যা, দাঙ্গা, চীনে মুসলিম হত্যা ইত্যাদি ইত্যাদি। খুব সহজ এবং নিত্য খবরে পরিণত হয়েছে এটা গত কয়েক যুগ ধরে।
কয়েকমাস আগেও জম্বু-কাশ্মীরে মুসলিমদেরকে নির্বিচারে রাস্তায় ফেলে হত্যা করা হয়েছে, এর আগে চীনে, মায়ানমারে, সিরিয়ায় কোন কারনছাড়া ক্রমাগত হত্যা করা হয়েছে মুসলিম জনগণকে। বিশ্ব নেতারা এতে মাথাও ঘামাননি।
সবচেয়ে কনযারভেটিভ এস্টিমেইট অনুযায়ী ২০০১ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত অ্যামেরিকার নেতৃত্বে ন্যাটো বাহিনীর হামলায় মারা গেছে প্রায় ৫ লক্ষ মুসলিম। গড়ে প্রতি বছর মারা গেছে ২৭,০০০ মুসলিম। প্রতিদিন অন্তত ৭৬ মুসলিম মারা গেছে।
আরেক হিসেব অনুযায়ী শুধু ২০০১-২০১১ পর্যন্ত দশ বছরে ন্যাটো জোট হত্যা করেছে ১৩ লক্ষ মুসলিমকে। অর্থাৎ প্রতি বছর গড়ে খুন করা হয়েছে ১,৩০,০০০ হাজার মুসলিমকে। প্রতিদিন মারা গেছে গড়ে ৩৫৬ জন মুসলিম।
অন্যদিকে মুসলিমরা এইভাবে মারা যাচ্ছে কমসেকম ২০ বছর ধরে।
করোনাভাইরাস এর প্রভাবে যেহেতু জনজীবন স্থবির, তাই অন্তত এই ৪ মাস তেমন কোন মুসলিম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি। গত দুই দশকে এটাই সম্ভবত সবচেয়ে দীর্ঘ সময়, যখন কোন মুসলিমকে নির্বিচারে হত্যা করা হয় নি।
ঘরে আটকে থেকে হয়ত নিজেদের জীবনের কয়েকটা দিন বেশি কাটাতে পারছেন হতভাগ্য ঐ সংখ্যালঘু জনতা। তাদের জন্য তাই করোনাভাইরাস আশির্বাদস্বরুপ। হয়ত পুরো দুনিয়ার জন্য যা মারণাস্ত্র, তাদের জন্য সেটাই জীবন বাঁচিয়ে রাখার আধ্মাতিক উপায় !
-মাহবুব গাদ্দাফী কুহু
যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ।
অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও কথাগুলো সত্য।
শুভ কামনা রইল বন্ধু❤
এমন সুদৃশ্য লেখনী অব্যাহত রাখিস।